শ্যামা সাধনা (Shyama Sadhana) বা কালী সাধনা একটি গভীর তান্ত্রিক সাধনা, যেখানে ভক্ত দেবী শ্যামা বা কালী মাতার আশীর্বাদ লাভের জন্য নির্দিষ্ট নিয়মে পূজা, জপ ও ধ্যান করেন। এই সাধনা খুবই শক্তিশালী, গভীর এবং একাগ্রতা ও নিয়মানুবর্তিতা ছাড়া করা উচিত নয়। এটি বিশেষত সাহস, শত্রুনাশ, অভয়, আধ্যাত্মিক উন্নতি এবং ভয়ের উপরে জয় লাভের জন্য করা হয়।
শ্যামা সাধনার প্রকারভেদ:
১. বিধি পূজাভিত্তিক শ্যামা সাধনা (যেটা সাধারণ গৃহস্থরা করেন)
২. তন্ত্রশাস্ত্রভিত্তিক তান্ত্রিক শ্যামা সাধনা (উচ্চস্তরের তপস্যা, গুরু ছাড়া করা নিষিদ্ধ)
এখানে আমরা গৃহস্থের জন্য উপযুক্ত নিরাপদ সাধনার নিয়ম, মন্ত্র ও বিধি-নিষেধ বলছি।
শ্যামা সাধনার প্রস্তুতি:
🔹 সময়:
- সবচেয়ে উপযুক্ত সময় কার্তিক মাসে দীপান্বিতা অমাবস্যা (শ্যামা পূজা)
- এছাড়া অমাবস্যা রাত বা কৃষ্ণপক্ষের শুক্রবার ভালো সময়
🔹 স্থান:
- বাড়ির পূজার ঘরে বা পরিষ্কার নির্জন জায়গায় পূজা করা যায়
- কালি মূর্তি বা ছবি সামনে রেখে পূজা করুন
সহজ ও নিরাপদ মন্ত্র:
১. শ্যামা মাতার মূল মন্ত্র:
"ॐ क्रीं कालिकायै नमः"
বাংলা উচ্চারণ: “ওঁ ক্রীং কালিকায়ৈ নমঃ”
🔸 এটি মাতৃমন্ত্র বা বীজমন্ত্র। প্রতিদিন ১**৮ বার জপ করলে মা শ্যামার কৃপা লাভ হয়।
পূজা ও সাধনার নিয়ম:
পূজার উপকরণ:
- শ্যামা মায়ের ছবি বা মূর্তি
- লাল ফুল (জবা বা রক্তজবা উত্তম)
- ধূপ, দীপ, প্রদীপ
- নারকেল, কলা, পঞ্চপ্রকার ফল
- মিষ্টান্ন (যেমন লাড্ডু, সন্দেশ)
- লাল চুড়ি, সিঁদুর, কাজল, পান
- গঙ্গাজল ও পবিত্র জল
পূজার ধাপ:
১. স্নান করে পরিষ্কার পোশাক পরে পূর্বমুখী হয়ে বসুন
২. মায়ের নাম উচ্চারণ করে ধ্যান করুন
“ওঁ ক্রীং কালিকায়ৈ নমঃ” বলে মায়ের ধ্যান করুন
৩. প্রদীপ জ্বালান ও ধূপ দিন
৪. লাল ফুলে মন্ত্র জপ করে অর্পণ করুন
৫. মন্ত্র জপ: ১*৮ বার বীজমন্ত্র (ওঁ ক্রীং কালিকায়ৈ নমঃ)
৬. শেষে প্রার্থনা করুন মায়ের কৃপা ও রক্ষা চেয়ে
বিধি-নিষেধ:
১. অহংকার নিয়ে বা শত্রু দমন ইচ্ছায় পূজা করবেন না — তা বিপদ ডেকে আনতে পারে।
২. নারকীয়, রক্তপাতযুক্ত তান্ত্রিক কাজ এড়িয়ে চলুন — এগুলোর জন্য গুরু এবং সাধ্য লাগে।
3. সততা ও ভক্তিভাব জরুরি — চিত্তে শান্তি ও নিবেদন থাকা চাই।
4. রজঃস্রাবকালীন মেয়েরা পূজা থেকে বিরত থাকবেন
5. মাতাল অবস্থায়, অশুচি অবস্থায় পূজা করবেন না।
6. শ্যামা সাধনায় মনের নিষ্ঠা ও নিয়মানুবর্তিতা আবশ্যক
ফলাফল ও আশীর্বাদ:
যদি নিষ্ঠা সহকারে এই সহজ বীজমন্ত্র ও সাধনা নিয়মিত করা যায়, তাহলে—
- ভয় ও মানসিক দুর্বলতা দূর হয়
- শত্রু নাশ হয়
- আত্মবিশ্বাস বাড়ে
- আধ্যাত্মিক শক্তি ও মানসিক স্থিরতা অর্জিত হয়
- মা শ্যামার আশীর্বাদে জীবন সুরক্ষিত ও কল্যাণময় হয়
শেষ কথা:
শ্যামা সাধনা শুধু শক্তি অর্জনের পথ নয়, এটা আত্মদর্শন ও আত্মবিশ্বাসেরও পথ। আপনি যদি চান, আমি আপনার জন্য ২*১ দিনের শ্যামা সাধনা পদ্ধতি তৈরি করে দিতে পারি (দিন অনুযায়ী কাজ, মন্ত্র, ধ্যান)। চাইলে জানাবেন। —জয় মা শ্যামা!
নোট: কাজ করার পূর্বে অবশ্যই অনুমতি নিয়ে কাজ করতে হবে। অনুমতি ছাড়া কাজ করলে সম্পূর্ণ বিফলে যাবে এবং ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ইমো বা হোয়াটসঅ্যাপ — 01980482475